ক্যান্সার কোষ কেন উৎপন্ন হয়?

কার্সিনোজেনেসিস স্বাভাবিক কোষের জিনগত উপাদানের মিউটেশন এবং এপিমিউটেশন দ্বারা সৃষ্ট হয়, যা বিস্তার এবং কোষের মৃত্যুর মধ্যে স্বাভাবিক ভারসাম্যকে বিপর্যস্ত করে। এর ফলে শরীরে অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন হয়। কোষের অনিয়ন্ত্রিত এবং প্রায়ই দ্রুত বিস্তার সৌম্য বা ম্যালিগন্যান্ট টিউমার (ক্যান্সার) হতে পারে।

Feb 5, 2025 - 15:56
 0  41
ক্যান্সার কোষ কেন উৎপন্ন হয়?

অস্বাভাবিক কোষের অনিয়ন্ত্রিত বিভাজন দ্বারা সৃষ্ট একটি রোগ হলো ক্যানসার। এই কোষগুলো শরীরের স্বাভাবিক টিস্যুতে অনুপ্রবেশ করে ক্ষতি করতে থাকে। ইদানীং নানাবিধ রাসায়নিক, দূষণ ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের কারণে ক্যানসারের মতো জটিল রোগ বেড়ে চলছে। বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ এখন ক্যানসার। তবে স্ক্রিনিং, সঠিক সময়ে চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ কৌশলের অগ্রগতি অনেক ক্যানসার রোগীর বেঁচে থাকার হারকে উন্নত করেছে।ক্যানসার হলো জেনেটিক মিউটেশনের ফল যা কোষের স্বাভাবিক কার্যকারিতা পরিবর্তন করে। এই মিউটেশনগুলো দ্রুত কোষ বিভাজন ও বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করে। যার ফলে সৃষ্টি হয় টিউমার। এই টিউমার নিরীহ বা বিনাইন এবং ম্যালিগন্যান্ট বা ক্যানসারাস হতে পারে। ম্যালিগন্যান্ট টিউমারগুলোর কাছাকাছি টিস্যুকে আক্রমণ করার এবং সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা রয়েছে, একে বলে মেটাস্ট্যাসিস।

ক্যানসারের লক্ষণ কী

রোগের ধরন এবং অবস্থানের ওপর নির্ভর করে ক্যানসারের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। তবে কিছু সাধারণ লক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ। যেমন ক্লান্তি বা অবসাদ, কোথাও কোনো পিণ্ড বা গোটা, ওজন হ্রাস, ত্বকের পরিবর্তন, জন্ডিস, নতুন তিল বা বিদ্যমান মোলের পরিবর্তন, মল বা মূত্র ত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন, দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা শ্বাসকষ্ট, গিলতে অসুবিধা বা গলায় কিছু আটকে যাওয়ার অনুভূতি। বদহজম, খাওয়ার পরে অস্বস্তি বা ব্যথা, পেশি বা জয়েন্টে ব্যথা, অকারণে তীব্র ব্যথা, দীর্ঘমেয়াদি জ্বর এবং রাতে ঘাম, শরীরের কোথাও অস্বাভাবিক রক্তপাত বা রক্ত জমাট বাঁধা ইত্যাদি।

যদি এই উপসর্গগুলো দেখা যায়, তবে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি।

ক্যানসার প্রতিরোধে করণীয়

১. তামাক জাতীয় জিনিস ও অ্যালকোহল পরিহার করতে হবে।

২. বাল্যবিবাহ রোধ করলে, সন্তানকে স্তন্যদান করলে, ওরাল ও ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চললে ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।

৩. শাকসবজি, ফলমূল, বিটা ক্যারোটিন ও আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে, যা ক্যানসার থেকে সুরক্ষা দেয়। একইসঙ্গে চর্বিযুক্ত, অস্বাস্থ্যকর ও জাঙ্ক ফুড পরিহার করতে হবে।

৪. ফিজিক্যাল অ্যাকটিভিটি বাড়াতে হবে, নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস ও ব্যায়াম করতে হবে।

৫. হেপাটাইটিস 'বি'র ভ্যাকসিন নিতে হবে ক্যানসার প্রতিরোধে। এখন শিশুদের এই ভ্যাকসিন দেওয়া হয় টিকা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে। এ ছাড়া অন্যরাও এই ভ্যাকসিন নিতে পারবেন।

৬. হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস, যেটা ৯৯ শতাংশ জরায়ুমুখ ক্যানসারের জন্য দায়ী, এটি প্রতিরোধে ভ্যাকসিন আছে। নয় থেকে ১৪ বছর বয়স এই ভ্যাকসিনের উপযুক্ত সময়। এ ছাড়া ২৫ বা ৪০ বছর বয়সেও এই ভ্যাকসিন নিলে কিছুটা সুরক্ষা দেবে।

৭. মাল্টিপল সেক্সুয়াল পার্টনার ও অস্বাভাবিক যৌন আচরণ পরিহার করতে হবে।

৮. অপরিকল্পিত নগরায়ন বন্ধ করতে হবে। নিয়মনীতি বাস্তবায়ন, খেলার মাঠ, হাঁটার জন্য ফুটপাত রাখতে হবে।

৯. ক্যানসার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে সর্বস্তরে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow